
স্মার্টফোন বাজারে একটি ব্র্যান্ড আরেকটি ব্র্যান্ডের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, কাদা ছোঁড়াছোঁড়ি করছে – এ ঘটনা কোনো নতুন বিষয় নয়। তবে অন্য কোম্পানির তৈরি করা ফিচার নিজেদের অ্যান্ড্রয়েড (Android) ফোনে ব্যবহার করার জন্য, এবার দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্ট Samsung (স্যামসাং)-এর বিরুদ্ধে মামলা করল একটি পেটেন্ট লাইসেন্সিং সংস্থা। এই মামলার মূলে যে ফিচারটি রয়েছে, সেটি ইউজারদেরকে ফোনে কতটা ব্যাটারি অবশিষ্ট আছে তা জানতে সাহায্য করে (সোজা ভাষায় ‘ব্যাটারি রানটাইম প্রেডিকশন ফিচার’) এবং Samsung তাদের ফোনে এই ফিচারটিকে কাজে লাগিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। K.Mirza (কে.মির্জা) নামক পেটেন্ট লাইসেন্সিং ফার্মটির (মামলাকারী) মতে, এই ফিচারটি আসলে একটি ডাচ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের তৈরি এবং দক্ষিণ কোরিয়ান টেক সংস্থাটি এটিকে অন্যায্যভাবে কপি করেছে। আসুন ঘটনাটির সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
‘ব্যাটারি রানটাইম প্রেডিকশন’ ফিচার ব্যবহার করায় Samsung-এর বিরুদ্ধে মামলা
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, কে.মির্জা নামক পেটেন্ট লাইসেন্সিং ফার্মটি বিশ্বজুড়ে একাধিক কোম্পানিকে পেটেন্টের লাইসেন্স দেয়। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি যদি সংস্থাগুলির পেটেন্ট ইনভেনশন অন্য কেউ কপি করার চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিন্দুমাত্র পিছপা হয় না তারা। এর পাশাপাশি পেটেন্ট লাইসেন্স ফার্মটি আইবিএম (IBM) এবং শার্প (Sharp)-এর মতো সুপরিচিত মাল্টিন্যাশনাল ফার্মের পোর্টফোলিও ম্যানেজ করে। ফলে একথা খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে, কে.মির্জা, মোটেই ছোটোখাটো মাপের তুচ্ছ কোনো সংস্থা নয়; তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি তথা ক্ষমতার পরিধি অনেকটাই প্রশস্ত।
সেক্ষেত্রে এই প্রথিতযশা পেটেন্ট লাইসেন্সিং ফার্মটি সম্প্রতি নামজাদা টেক জায়েন্ট স্যামসাং-এর বিরুদ্ধে এক বড়োসড়ো অভিযোগ এনেছে। সংস্থাটি দাবি করেছে যে, স্যামসাং অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ছোটো ভার্সনগুলির (অর্থাৎ পুরোনো) দ্বারা চালিত ফোনে যে ব্যাটারি রানটাইম প্রেডিকশন ফিচার ব্যবহার করে, সেটি আসলে ‘Nederlandse Organisatie voor Toegepast Natuurwetenschappelijk Onderzoek’ বা টিএনও (TNO) নামক একটি ডাচ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের তৈরি। সেইসাথে কে.মির্জা একথাও জানিয়েছে যে, স্যামসাং-ই একমাত্র সংস্থা নয় যারা এই ফিচারটি ব্যবহার করে, এই তালিকায় গুগল (Google), শাওমি (Xiaomi), রিয়েলমি (Realme)-র মতো একাধিক নামজাদা ব্র্যান্ডও মজুত রয়েছে। তবে স্যামসাং-এর বিরুদ্ধেই প্রথম এই মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আগামী দিনে অন্যান্য সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হল, তাহলে সর্বপ্রথম Samsung-এর বিরুদ্ধেই কেন এই মামলা দায়ের করা হল? সেক্ষেত্রে K.Mirza সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ান টেক জায়েন্টটির ফোনে ব্যবহৃত ব্যাটারি রানটাইম প্রেডিকশন ফিচার তথা এর কার্যপদ্ধতির সঙ্গে ডাচ রিসার্চ ইন্সটিটিউট কর্তৃক নির্মিত ফিচারটির হুবহু মিল রয়েছে। ফলে Samsung যে ডাচ সংস্থাটির তৈরি ফিচারটিকে কপি করেছে, সেকথা জলের মতো স্পষ্ট। আর এই কাজ অন্য কোনো কোম্পানি করলে তাদেরকেও যে ভবিষ্যতে কোনোরকম রেহাই দেওয়া হবে না, সেকথাও সংস্থাটি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত ২০ মে পেটেন্ট লাইসেন্সিং ফার্মটি এই মামলা দায়ের করেছে, এবং এই প্রসঙ্গে Samsung-এর তরফে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এবার এই মামলার ফলাফল কী দাঁড়ায়, এখন সেটাই দেখার…
More Stories
90Hz ডিসপ্লে ও 50MP ক্যামেরার সঙ্গে লঞ্চ হল Honor 70 Lite 5G, দাম সহ খুঁটিনাটি তথ্য রইল
গ্রামেও পাওয়া যাবে BSNL 4G পরিষেবা, বসানো হচ্ছে ১ লাখের বেশি টাওয়ার
ফোল্ডেবল ক্ল্যামশেল ফোনের জগতে প্রবেশ Vivo-র, প্রথম মডেলে থাকবে এই প্রসেসর