
বিশ্বের সকল প্রান্তে এখনও পর্যন্ত 5G (৫জি) এসে পৌঁছোয়নি, তবে এরই মধ্যে ৬ষ্ঠ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক নিয়ে জোর চর্চা চলছে। প্রযুক্তি মহলের মতে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই এই নেটওয়ার্ক চালু হয়ে যাবে। এমনকি অনেক দেশ ইতিমধ্যে 6G (৬জি) নেটওয়ার্কের ট্রায়াল সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। আর এই তালিকায় জুড়ে গিয়েছে জাপানের নামও। আসলে সাম্প্রতিক খবর থেকে গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই 6G ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে জাপান। এর জন্য তারা নাকি দেশীয় টেকনোলজি বেস এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করাও শুরু করেছে।
বলে রাখি, গত ৬ জুন এনটিটি ডোকোমো (NTT DOCOMO) মানে জাপানের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানি – এনইসি (NEC), ফুজিৎসু (Fujitsu) ও নোকিয়া (Nokia)-র সাথে হাতে হাত মিলিয়ে ৬জি ট্রায়ালের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে। এই সংস্থাগুলি ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ৬জি রোলআউট করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। অর্থাৎ একথা স্পষ্ট যে, ষষ্ঠ প্রজন্মের ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের হাত ধরে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্ব প্রযুক্তির দুনিয়ায় এক ধামাকাদার বিপ্লব আসতে চলেছে।
6G-তে কীরকম স্পিড পাওয়া যাবে?
গত মে মাসে জাপানের নেটওয়ার্ক রিসার্চ ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা, এনআইসিটি (NICT) বা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিতে গোটা বিশ্বে সর্বপ্রথম ০.১২৫ মিমি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাসের একটি মাল্টি-কোর ফাইবার (MCF)-এ প্রতি সেকেন্ডে ১ পেটাবাইট ট্রান্সমিশন স্পিড রেকর্ড করেছে। অবগতির জন্য জানিয়ে রাখি, পেটাবাইট মানে হল ১০ লক্ষ গিগাবাইট ডেটা। উল্লেখ্য যে, ৫জিতে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১০ জিবিপিএস ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড পরিলক্ষিত হয়েছে। সেই হিসাবে এনআইসিটির উক্ত স্পিডটি এর তুলনায় এক লক্ষ গুণ দ্রুত। ফলে ৬জি-র আগমন ঘটলে কী পরিমাণ দুরন্ত গতির নেট স্পিড পাওয়া যাবে, তার একটি হালকা আভাস এখান থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।
তবে প্রাথমিক পরীক্ষায় এরকম দুর্দান্ত স্পিড মিললেও বাস্তব জীবনে এতটা পাওয়া যাবে না বলেই বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৬জিতে ব্যবহারকারীরা প্রতি সেকেন্ডে ১ টিবি অর্থাৎ ১০০০ জিবিপিএস স্পিড পাবেন। সেক্ষেত্রে ৫জির ইন্টারনেট স্পিড ১০ জিবিপিএস আর ৬জির স্পিড ১০০০ জিবিপিএস হবে। এবার সাংখ্যমান দুটির তুল্যমূল্য বিচার করে আপনারাই বুঝে নিন যে আর কয়েক বছরের মধ্যেই কতটা উন্নত মানের নেট পরিষেবা ইউজারদের কাছে উপলব্ধ হতে চলেছে!
ভারতে 6G কবে আসবে?
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, 5G-র মজা উপভোগ করার জন্য ভারতবাসীকে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে গোটা দেশে 5G রোলআউটের আগেই 6G পরিষেবা নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি ট্রাই (TRAI)-এর রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, দেশে ইতিমধ্যেই ষষ্ঠ প্রজন্মের ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, 5G ও 6G নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা শুধু দ্রুত গতির ইন্টারনেটই পাবেন না, বরং আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে এবং এর ফলে দেশের অর্থনীতিও অনেকটাই চাঙ্গা হবে। সবমিলিয়ে, আগামী দিনে 6G রোলআউটের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম সারির দেশ হিসেবে নিজের জায়গা করে নিতে ভারত যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।
More Stories
ফাঁস হওয়া ভিডিয়ো Tecno-র প্রথম ফোল্ডেবল ফোনের ডিজাইন প্রকাশ্যে আনল, এ মাসেই লঞ্চ
Laptop Sale: সবচেয়ে সস্তা Core i9 প্রসেসরের ল্যাপটপের সেল আজ থেকে শুরু, রয়েছে ৩২ জিবি র্যাম
কম দামে বাজারে এল Noise Buds Connect ইয়ারফোন, পাবেন দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ